যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে সারাদিনই প্রাণ হারানোর ভয়ে জড়োসড়ো দশা গাজাবাসীর। বাড়িঘর হারিয়ে দিনের পর দিন ধরে উদ্বাস্তু জীবন কাটাচ্ছেন তারা। এদের মধ্যে অনেকেই আশ্রয় পেয়েছে শরণার্থী শিবিরে।
কিন্তু গাজার বহু মানুষ পথে পথে কাটাচ্ছে যাযাবর জীবন। শীত নামতে শুরু করায় সেখানে টিকে থাকার লড়াই আরও কঠিন হয়ে উঠেছে যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটির মানুষের জন্য।
যুদ্ধে বিরতি, তাই বহুদিন পর জ্বলছে চুলো। রান্না করে কিছু খাবার সুযোগ পেয়েছে ফিলিস্তিনি শরণার্থীরা। ইসরাইলের অবরোধের কারণে খাবার, জ্বালানিসহ মৌলিক চাহিদা পূরণের উপায় ছিলো না গাজাবাসীর।
সাতদিনের যুদ্ধবিরতির সুযোগে কিছু ত্রাণ পৌঁছেছে অবরুদ্ধ উপত্যকায়। হাফ ছেড়ে বাঁচেন ফিলিস্তিনিরা। কিন্তু চুক্তি শেষেই আবারও মুহুর্মুহু বোমা হামলায় কাঁপতে শুরু করেছে গাজার ভূখণ্ড।
আবারও মৃত্যুপুরীতে রূপ নিয়েছে গাজা। এক বাসিন্দা বলেন, খুব সামান্য খাবার ভাগে পেয়েছি। শুকনো রুটি ছাড়া বাচ্চাদের কিছুই দেয়ার নেই। বেঁচে থাকলেও না খেয়ে থাকতে হবে আবার।
উত্তর থেকে দক্ষিণ আর দক্ষিণ থেকে উত্তর, বেঁচে থাকার লড়াইয়ে ছোট এক ভূখণ্ডের মধ্যেই ছুটে চলেছে গাজার বাসিন্দারা। নতুন করে হামলা শুরুর পর এবার খান ইউনিসে অবস্থান করা
ফিলিস্তিনিদের রাফাহ সীমান্তের কাছে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে লিফলেট দিতে শুরু করেছে ইসরাইলি বাহিনী। তা মেনেই পরিবার নিয়ে অব্যাহত রয়েছে গাজাবাসীর ছুটে চলা।
একদিকে যেমন এক এলাকা ছেড়ে মানুষ অন্য এলাকায় পাড়ি জমাচ্ছে, অন্যদিকে যুদ্ধ শুরুর আগে গাজার যেসব বাসিন্দারা ভূখণ্ডের বাইরে অবস্থান করছিলো, যুদ্ধবিরতির সুযোগে নিজ ভূখণ্ডে ফিরেছেন তারা।
এদেরই একজন বলেন, প্রাণ হারানোর ভয় আছে ঠিকই। কিন্তু তাই বলে তো নিজের স্বজন, নিজেদের মাটি ছেড়ে চলে যেতে পারি না। মরলে এই মাটিতেই মরবো। বাঁচলেও এখানেই থাকবো।
সব প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে এবার যুদ্ধ হয়েছে প্রতিকূল আবহাওয়া। শীত নামতে না নামতেই ভোগান্তি বেড়েছে তাদের। আগুনের তাপে নিজেদের উষ্ণ রাখার সাময়িক চেষ্টা করছেন।
সাময়িক, কারণ গাজায় যে পরিমাণ জ্বালানি প্রবেশ করেছে যুদ্ধ দীর্ঘ হলে তা ফুরাতে বেশি সময় লাগবে না। অনেক শীত পড়তে শুরু করেছে। কিন্তু কাপড়ের মারাত্মক অভাব। বাচ্চারা খুবই কষ্টে আছে।
যুদ্ধ বন্ধ করে ইসরাইল ফিলিস্তিন ইস্যুতে স্থায়ী সমাধান আনতে আন্তর্জাতিক মহলকে উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানিয়েছেন গাজার বাসিন্দারা।