ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে, তাতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের দেয়া সমর্থনকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
হামাসের পাশাপাশি ইসলামিক জিহাদ ও প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষও নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।
এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, প্রস্তাবিত গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার মূলনীতিগুলো বাস্তবায়নে তারা মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
সোমবার হামাস জানিয়েছিলো, গাজায় যুদ্ধের অবসান নিশ্চিত ও সুরক্ষিত করবে কেবল এমন একটি চুক্তি মেনে নিতে ইচ্ছুক তারা।
অন্যদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
বিবৃতিতে হামাস বলেছে, নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, (ইসরাইলি বাহিনীর) সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, বন্দী বিনিময়, গাজার পুনর্গঠন, বাস্তুচ্যুতদের তাদের আবাসস্থলে ফিরে যাওয়া, জনসংখ্যাগত পরিবর্তন বা গাজা ভূখণ্ডের এলাকা হ্রাস প্রত্যাখ্যান এবং জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা সরবরাহের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে; হামাস একে স্বাগত জানায়।
হামাস বলেছে, এই প্রস্তাবের নীতিগুলো আমাদের জনগণ এবং প্রতিরোধ বাহিনীর দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ উল্লেখ করে হামাস আরও বলেছে, তারা এসব বিষয় বাস্তবায়নে মধ্যস্থতাকারীদের সাথে পরোক্ষ আলোচনায় যুক্ত হতে চায়।
হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা সামি আবু জুহরি বলেছেন, হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে ইসরাইল এটি মেনে চলবে-তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে।
রয়টার্সকে তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ইসরাইলকে মেনে নিতে বাধ্য করা যুক্তরাষ্ট্রে জন্য সত্যিকারের একটি পরীক্ষা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন হামাসের বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়েছে বলেছেন, তবে গাজায় অবস্থানরত হামাস তেৃত্বের কাছ থেকে নিশ্চিত বার্তা আসার প্রয়োজন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মাসে যুদ্ধবিরতি চুক্তির রূপরেখা দিয়েছিলেন। এতে তিন পর্বের যুদ্ধবিরতি পর পর্যায়ক্রমে স্থায়ীভাবে যুদ্ধ অবসানের কথা বলা হয়। কয়েকটি দেশের সরকার এবং জি সেভেন জোটও এতে সমর্থন দেয়। সোমবার নিরাপত্তা পরিষদও প্রস্তাবটিতে সায় দেয়।
নিরাপত্তা পরিষদে এই প্রস্তাবের পক্ষে ১৪টি ভোট পড়ে । পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে শুধু রাশিয়া ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিলো।
ইসরাইল বলেছে, তারা হামাসের পরাজয় না হওয়া পর্যন্ত শুধু সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে।
অন্যদিকে হামাস পাল্টা বলেছে, যে তারা এমন কোনো চুক্তি মেনে নেবে না যা যুদ্ধ শেষ হওয়ার নিশ্চয়তা দেয় না।
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের আট মাস ধরে চলা হামলায় ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে হামাস শাসিত অঞ্চলটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।