লোহিত সাগরে গত সপ্তাহে ইয়েমেনের ইরানপন্থি হুথি বিদ্রোহীদের হামলার শিকার গ্রিসের পতাকাবাহী তেলের ট্যাংকার ‘সাউনিন’ এখনও জ্বলছে। এর ফলে, সাগরে তেল ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে মঙ্গলবার মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র এয়ার ফোর্স মেজর জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার জানান, ট্যাংকারটিতে প্রায় দশ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
পেন্টাগন মুখপাত্র আরও জানান, তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ট্যাংকারটি উদ্ধার করতে দুইটি টাগবোট পাঠানো হয়েছিল। তবে হুথিরা তাদেরকে সতর্ক করে ও আক্রমণের হুমকি দেয়।
গত ২১ আগস্ট ইয়েমেনের হোদেইদাহ বন্দর শহরের উপকূলে একাধিক প্রজেক্টাইল দিয়ে সাউনিনকে আক্রমণ করা হয়। এরপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের লোহিত সাগর নৌমিশন শিপিং কোম্পানি এবং জাহাজের ক্যাপ্টেনের অনুরোধে ট্যাংকারটির ২৩ জন ফিলিপিনো এবং দুই রুশ ক্রুর সুরক্ষার জন্য একটি ইউনিট পাঠায়।
রাইডার জানান, আক্রমণের সময় ট্যাংকারটি ইরাক থেকে গ্রিসের দিকে যাচ্ছিল। আক্রান্ত হলে ক্রুরা জাহাজ ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মিশন তাদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।
হুথিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি বলেন, সাউনিন ট্যাংকারটিকে আক্রমণ করা হয়েছে কারণ এটি এথেন্সভিত্তিক ডেল্টা ট্যাংকার্স দ্বারা পরিচালিত, যা দখলকৃত ফিলিস্তিনের বন্দরগুলোতে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেছিল।
রাইডার বলেন, ট্যাংকার থেকে তেল ছড়ানোর ফলে এটি শুধু নাবিকদের জন্য নয়, পরিবেশের জন্যও একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। এটি সন্ত্রাসের পাগলাটে কর্মকাণ্ড যা বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক বাণিজ্যকে অস্থিতিশীল করছে, নিরীহ নাবিকদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছে এবং লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরের সামুদ্রিক পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
ইরান-সমর্থিত হুথি গোষ্ঠী গত নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়ে আসছে। আগস্টেই লোহিত সাগরে আক্রমণের শিকার তৃতীয় জাহাজ সাউনিন। তাদের দাবি, গাজায় ইসরাইলি যুদ্ধের প্রতিবাদে ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতির প্রকাশের অংশ হিসেবে এসব হামলা চালাচ্ছে।