ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে বন্দি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার জন্য চুক্তির দাবিতে শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত ইসরাইলে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। যুদ্ধবিরতি নিয়ে আরও আলোচনার আগে আগে ইসরাইলে বড় ধরনের এ বিক্ষোভ হলো।
তেল আবিবে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীরা যুদ্ধবিরোধী নানা স্লোগান দেন। বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গাজায় সংঘাত দীর্ঘায়িত করার জন্য অভিযুক্ত করেন। খবর বিবিসি’র।
শনিবার মিসরে হামাসের একটি প্রতিনিধিদল মধ্যস্থতাকারীদের সাথে আলোচনা করতে এসেছিল।
শনিবারের আলোচনা শেষে হামাস বলেছে, আলোচনায় এখন পর্যন্ত নতুন কোনো অগ্রগতি নেই। তবে রোববার নতুন দফার আলোচনা শুরু হবে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় কায়রোর আলোচনা আবার শুরু হয়েছে। জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজায় ইসরাইলের হামলা থামানোর লক্ষ্যে আলোচনা চলছে।
তবে, চুক্তিটি অস্থায়ী নাকি স্থায়ী হবে, সে বিষয়ে সমঝোতা আটকে আছে বলে মনে হচ্ছে। গাজায় ৪০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতি এবং এ সময়ে হামাসের হাতে বন্দি ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিষয়টি এখন কায়রোর আলোচনার টেবিলে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার একজন উপদেষ্টা জানান, হামাস ‘সম্পূর্ণ গুরুত্ব সহকারে’ সর্বশেষ প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখছে।
তবে তিনি যেকোনো চুক্তিতে স্পষ্টভাবে গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের সম্পূর্ণ সমাপ্তি অন্তর্ভুক্ত থাকার হামাসের দাবির কথা পুনরায় জানান।
এদিকে, বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরাইলি মন্ত্রী আমিচাই চিকলি বলেছেন, ‘হামাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত’ যুদ্ধ চলবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এমন একটি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার উপায় যেখানে যুদ্ধের সমাপ্তি বা রাফাতে একটি পূর্ণ মাত্রার অপারেশন ছাড়াই গাজা ছেড়ে দেওয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
গতকাল ইসরাইলে যে বিক্ষোভ হলো, তা একটি চুক্তির জন্য নেতানিয়াহু সরকারের ওপর অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়তে থাকার সর্বশেষ নিদর্শন। জিম্মিদের ইসরাইলে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রবল চাপের মুখে আছেন নেতানিয়াহু।
গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে হামলা চালায়। হামলাকালে তারা ২৫২ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে ১২৮ জন এখনও জিম্মি অবস্থায় গাজায় আছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ৩৪ জন মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তেল আবিবে গতকালের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন নাটালি এলডোর নামের এক ইসরাইলি। নাটালি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, তিনি একটি চুক্তি সমর্থনে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। জীবিত, মৃতসহ সব জিম্মিকে ফিরিয়ে আনতে হবে। নয়তো এই সরকার পরিবর্তন করতে হবে।
এদিকে, শনিবার একটি যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার মন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ বলেন, রূপরেখার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক কিছু এখনও পাওয়া যায়নি। যখন তা গৃহীত হবে, তখন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা বৈঠক করবে এবং আলোচনা করবে।