ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিমতীরের জেনিনে রোববার টানা পঞ্চম দিনের মতো অভিযান চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। তথাকথিত ‘সন্ত্রাস বিরোধী’ এ অভিযানের অংশ হিসেবে জেনিনে খাদ্য, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল।
এছাড়া ওই এলাকায় ইসরাইলি বাহিনী স্বাস্থ্য সুবিধাগুলোও বন্ধ করে দিয়েছে এবং অ্যাম্বুলেন্সকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ফরাসি চিকিৎসা দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ)। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
জেনিন থেকে পালিয়ে যাওয়া এক বাসিন্দা তাহের আল-সাদি আল-জাজিরাকে বলেছেন, শরণার্থী শিবিরের ভেতরে খাদ্যসহ সব ধরনের মৌলিক চাহিদা বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী।
ওই এলাকায় আশ্রয় নেওয়া হাজার হাজার ফিলিস্তিনিদের মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি সেখানকার দোকানপাট ও রাস্তাঘাট বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছে তারা। রোববার সেখানে আরও ইসরাইলি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
গত বুধবার কোনও ধরনের ঘোষণা ছাড়াই জেনিনে বড় ধরনের অভিযান শুরু করে ইসরাইল। সাঁজোয়া যান, ড্রোন ও স্নাইপারদের সহায়তায় শত শত ইসরাইলি সেনা এ অভিযান শুরু করে।
জেনিন পৌরসভা জানিয়েছে, পাঁচ দিনের অভিযানে শহরের প্রায় ৭০ শতাংশ রাস্তাঘাট ও ২০ কিলোমিটার পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এর ফলে জেনিনের ৮০ শতাংশ শরণার্থী শিবিরের ২০ হাজার মানুষ তীব্র পানির সংকটে ভুগছে। এ ধ্বংসাত্মক অভিযানে পাঁচ দিনে অন্তত ২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
জেনিন শহর থেকে আল-জাজিরার সাংবাদিক নিদা ইব্রাহিম জানিয়েছেন, সেখানে কয়েক দশকের মধ্যে আমার দেখা সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক অভিযান এটি।
তিনি বলেন, ‘সামরিক বাহিনীর দখলে থাকা ফিলিস্তিনিদের নিজের শহরের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। শহরের রাস্তাঘাট তার নিজের নয়। নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবেন কিনা, তা তিনি জানেন না। এমনকি তার বাড়িটি নিরাপদ আছে কিনা, তাও তিনি জানেন না।’
গত ৭ অক্টোবর গাজারা সাথে সাথেই পশ্চিমতীরে চালানো ইসরাইলি অভিযানে অন্তত ৬৭৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ সময়ে অন্তত ১০ হাজার ৩০০ ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরাইলি বাহিনী।